মুসলমানদেরকে তাকফির বা কুফরি ঘোষণার ক্ষেত্রে ইবনে তাঈমিয়ার অবস্থান
ইবনে তাঈমিয়ার অনেকগুলো লেখনী রয়েছে। তমধ্যে কিছু কিতাব রয়েছে যেগুলো একেবারে জ্ঞানগর্ভ সুক্ষ বিষয়ে রচিত। ফলশ্রুতিতে বর্তমান যুগের যুবকেরা সেগুলোর অর্থ উপলব্ধিতে অনেক বেগ পেতে হয়। তাদের মধ্যে কেউ কেউ তাদের নিজস্ব অনুভূতি এবং উপলব্ধির সাথে এটি পড়ে, তারা যা চায় তা সেখান থেকে বের করে এবং তারা যা চায় তদানুসারে কেটে ফেলে, অর্থাৎ গ্রন্থের সাধারণ প্রেক্ষাপটের বাইরে নিয়ে যায়। তাকফিরি গোষ্ঠীর দুর্ভাগ্য হল যে তারা শাইখ ইবনে তাইমিয়া এবং অন্যান্যদের কথা থেকে শব্দগুলিকে খণ্ডিত করেছে এবং তাদের সাধারণ প্রেক্ষাপট থেকে কেটে দিয়েছে এবং অনেক মুসলমানকে গালি দেওয়ার জন্য মিথ্যা অনুমান ব্যবহার করেছে। আর প্রকৃতার্থে ইবনে তাঈমিয়ার গ্রন্থগুলো ইলমে শরিয়তের গভীর দখল, এবং লেখনীর পারস্পরিক সম্পৃক্ততা, শব্দের চাহিদা উপলব্ধি করা ইত্যাদি ব্যতীত সম্ভব নয়। বরং ইবনে তাঈমিয়া নিজেই তাকফিরের ফিতনায় জড়িত হওয়ার বিষয়ে সতর্ক করে বলেনঃ আর আমরা এটা বেছে নেব যে, কোন আহলে কিবলা বা মুসলমানদেরকে কাফির ফতোয়া দিব না। আর ইমাম শাফেয়ী থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, আমরা খাত্তাবী ফিরকা ব্যতীত অন্য কারোও যুক্তিকে রদ করব না। কেননা এই ফেরকা মিথ্যাকে হালাল মনে করে। একইভাবে ইমাম আবু হানিফা (রহঃ) এর ব্যপারেও ইমাম হাকিম বর্ণণা করেন যে, তিনি কোন আহলে কিবলা তথা মুসলমানকে তাকফির করার পক্ষপাতি নন। অনুরূপভাবে ইমাম আবু বকর রাজি ইমাম কারখী এবং অন্যান্যদের থেকে এ বিষয়ে বর্ণণা করেন।
ইবনে তাঈমিয়া তার মাজমুয়ায়ে ফাতওয়া আল ইসলামিয়্যাহ এর ৩য় খন্ডের ২২৯ পৃষ্ঠায় যেটা বলেছেন সেটা দেখলে মনে হয় যে, যারা উনাকে মনে করেন যে উনি তাকফিরের পক্ষপাতি তাদেরকে তিনি রদ (খন্ডন) করে বলেন, যারা আমার সাথে উঠাবসা করে তারা জানে যে, আমি তাদের মধ্যে অন্যতম যারা কোন নির্দিষ্ট কোন ব্যক্তিকে শরীয়তের সুস্পষ্ট প্রমাণাদি ব্যতীত কখনো কুফরি আবার কখনো ফাসেকী বলে আখ্যা না দেয়। বরং আমি দৃঢ়তার সাথে সাক্ষ্য দিই যে, মহান আল্লাহ এই উম্মতের গুণাহখাতা মাফ করে দিয়েছেন। আর কথাবার্তা, সংবাদ কিংবা প্রাক্টিক্যাল কাজে ভুল হওয়াটা স্বাভাবিক। আর যুগ যুগ ধরে এখন পর্যন্ত সালফে সালেহীনগণ এই সমস্ত বিষয়ে মতবিরোধ করে গেছেন; কিন্তু কেউ কাউকে উদ্দেশ্যপ্রনোদিত হয়ে কুফরি, ফাসেকি কিংবা পাপী বলে আখ্যায়িত করেননি।