The World Organization for al-Azhar Graduates Bangladesh Branch
The World Organization for al-Azhar Graduates Bangladesh Branch
১। এই প্রকারের তাকফিরি চিন্তা হচ্ছে ভাসা- ভাসা বা বাহ্যিক চিন্তা। এই চিন্তার অধিকারী ব্যাক্তির মধ্যে এবং অন্যের মধ্যে আকিদাগত পার্থক্য বিদ্বমান।
২। এই প্রকারের তাকফিরি মনোভাব হচ্ছে অহংকারি মনোভাব। আর এটা বর্তিত হয় সেই শ্রেণীর মানুষের উপর “যে ব্যক্তি বলে যে অমুক ধ্বংস হয়েছে ফলশ্রুতিতে সে নিজেই সবচেয়ে বেশি ধ্বংসের সম্মূখীন হবে।”
৩। এই প্রকারের বিবেক সব সময় সর্বনাশ ও ধ্বংসই কামনা করেঃ
প্রতিদিন সংবাদপত্রে মেট্রো স্টেশনের বিস্ফোরণ অথবা এমন কোন দল যারা স্টেশনকে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টাকালীন সময়ে আটক, অথবা গ্রেণেড বা বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করার সংবাদ প্রকাশিত হয়।
শুনতে অবাক লাগে যে, তমধ্যে কোন কোন অভিযুক্ত মসজিদের ইমাম, ধর্ম মন্ত্রনালয়ের খতিব, অন্য একজন অভিযুক্ত স্কুলের অধ্যক্ষ হিসেবে কাজ করেন, এবং তৃতীয় একজন শিক্ষক হিসেবে কাজ করেন, এবং অন্যরা আছেন যারা প্রকৌশল, বিজ্ঞান এবং অন্যান্যদের মতো নামকরা কলেজ থেকে গ্রাজুয়েট হয়েছেন।
এখন প্রশ্ন হল: একজন ইমাম এবং খতিব যিনি মানুষকে ওয়াজ করেন তিনি কিভাবে এই ধরনের কাজ করতে পারেন, এবং তিনি তার দেশবাসীর জন্য মন্দ ও অন্ধকার চান এবং একজন শিক্ষক, স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং প্রকৌশলী কীভাবে তা করেন, তাদের মধ্যে কেউ কি এক মুহূর্তও এ ধরণের কর্মকান্ডের বৈধতা বা নিষেধ সম্পর্কে চিন্তা করে না?
তারা কি নিজেরা নিজেদের বিবেকের কাছে এই ধরণের কর্মকান্ডের বৈধতার বিষয়ে প্রশ্ন রাখে না, ইসলামে কি এটি কল্যাণকর নাকি ক্ষতিকর, তাদের এই কর্মকান্ড কি তাদের নিজেদের উপকারে আসছে নাকি অপকারে আসছে?
আমি বিস্মিত হয়েছিলাম যারা বিদ্যুতের তার এবং ট্রান্সফরমারের বিস্ফোরণ এবং ধ্বংস করার ধারণাটি উদ্ভাবন করেছিল যা হাজার হাজার বাড়ি, কারখানা, হাসপাতাল, দোকান এবং ক্লিনিকগুলিকে আলোকিত করে, এই ধারণাটি ইসলামের ভিত্তি, নিয়ম- নীতি এবং দৃঢ়তার সাথে সাংঘর্ষিক। তারা কি ভেবে দেখে না যে, ইসলাম কি জীবিত রাখার বিষয়ে উৎসাহিত করে নাকি নাকি জীবনধারণের উপকরণগুলোকে ধবংস করতে উৎসাহিত করে?!
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি তার বিস্ময়কর ও সর্বাঙ্গীন হাদিসে ক্ষতি ও ক্ষতি করতে নিষেধ করেননি: “‘নিজে ক্ষতিগ্রস্ত হব না’ অন্যের ক্ষতি করব না”?! রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি তার বাহিনীকে নিষেধ করেননি যারা শত্রুদের সাথে যুদ্ধ করছে এমন সবকিছু ধ্বংস করতে যা সকল মানুষের জন্য উপকারী, তাই তিনি বলেছেন: “তোমরা একটি গাছ বা একটি খেজুর গাছও কাটবে না।” সেখানে কিভাবে ইসলাম তার অনুসারীদেরকে মানুষের নিত্য ও জরুরি ব্যবহার্য বিদ্যুৎ ও আলো বন্ধ করে দেওয়াকে সমর্থন করবে, ইসলাম তো স্বত্বাগত ও মজ্জাগত উভয়দিক থেকেই মানুষের জন্য আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করে। আর নুর দুই ধরনের। একটি বাস্তব আর অন্যটি রূপক। আর কে এমনটি চালু করেছে যে লোকেরা অন্ধকারে থাকবে আর লোকদেরকে এই অন্ধকারে নিপতিত করে তারা আনন্দ করবে এবং সুখী হবে?
সবচেয়ে বড় অপরাধ হল এই ধরণের ক্রাইমকে বৈধ করা এবং তাতে আনন্দ অনুভব করা, বিস্ফোরণ ঘটানোর আনন্দ, এবং বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতায় জনগণের ক্ষোভ এবং সরকারের প্রতি জনগণের মাঝে সৃষ্ট ক্ষোভের আনন্দ।
এখানে ঐ সমস্ত অপরাধী ও সাধারণ চোরের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে যে, সাধারণ চোর হয়ত পেটের দায়ে টেলিফোনের তার, বৈদ্যুতিক তার,রেলের খুচরা যন্ত্রাংশ ইত্যাদি চুরি করে; কিন্তু স্বীয় কর্মকান্ডের জন্য সে লজ্জা ও অনুশোচনা বোধ করে। পক্ষান্তরে, আর যারা টেলিফোন তার কিংবা বৈদ্যুতিক পাওয়ার হাউস ইত্যাদি কর্মকান্ডকে দ্বীন ইসলামে বৈধ মনে করে। আর এমনটি মনে করা সবচেয়ে বড় অপরাধ। কেননা পাপকে বৈধ মনে করা মহাপাপ। আর তাকবির (আল্লাহু আকবার) ধ্বনি দিয়ে এই সমস্ত ঘৃণ্য কাজ সম্পাদন এক মহা মুসিবত।